সাতক্ষীরা জেলা কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া পাঁচ আসামিকে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা এলাকায় ফিরে নতুন করে নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছিল বলে জানিয়েছে র্যাব-৬ সাতক্ষীরা।
র্যাব-৬ সাতক্ষীরার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার জানানো হয়, গত ৫ আগস্ট বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে সাতক্ষীরা জেলা কারাগারের জেল রক্ষীদের মারপিট ও লুটপাটের পর কারাগারের গেটের তালা ভেঙে পাঁচ আসামি পালিয়ে যায়। তারা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পেট্রোল বোমা, ককটেল ও দাহ্য পদার্থ ব্যবহার করে কারাগারের ভেতরে ভাঙচুর এবং আগুন জ্বালিয়ে কারাগারের নথিপত্রসহ বিপুল পরিমাণ সরকারি সম্পদ ক্ষতি সাধন করে।
কারাগার থেকে বের হয়ে আসামিরা সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় নাশকতা কার্যক্রম পরিচালনা করে। এ ঘটনায় সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি নাশকতার মামলা দায়ের করা হয়। মামলার তদন্তে র্যাবের একটি গোয়েন্দা দল আসামিদের ওপর বিশেষ নজরদারি শুরু করে। র্যাব-৬, সিপিসি-১ সাতক্ষীরার একটি আভিযানিক দল নাশকতাকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রাখে।
গত ২৬ আগস্ট সোমবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে র্যাবের দলটি সদর থানা, পাটকেলঘাটা ও শ্যামনগর থানা এলাকায় জেল পলাতক ও নাশকতার মামলার এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলেন:
১. নুরুজ্জামান গাজী (৪৪), পিতা- কেরামত গাজী, গ্রাম- বৈশখালী, থানা- শ্যামনগর (গ্রেপ্তার স্থান: শ্যামনগর থানাধীন ভেটখালী এলাকা)।
২. মোঃ মোশারফ হোসেন (৪৪), পিতা- মুনছুর আলী, গ্রাম- মাহমুদপুর, থানা- শ্যামনগর (গ্রেপ্তার স্থান: শ্যামনগর থানাধীন সোনারমোড় এলাকা)।
৩. মোঃ আবু সাঈদ (২৭), পিতা- সামছুর গাজি, গ্রাম- বংশীপুর, থানা- শ্যামনগর (গ্রেপ্তার স্থান: শ্যামনগর থানাধীন বংশীপুর এলাকা)।
৪. সুলতান মোড়ল (২৬), পিতা- লুৎফর মোড়ল, গ্রাম- হাজরাপাড়া, থানা- পাটকেলঘাটা (গ্রেপ্তার স্থান: পাটকেলঘাটা থানাধীন হাজরাপাড়া এলাকা)।
৫. আক্তারুল ইসলাম (৩২), পিতা- আহাদ শেখ, গ্রাম- ফয়জুল্লাহপুর, থানা- সাতক্ষীরা (গ্রেপ্তার স্থান: সদর থানাধীন ফয়জুল্লাহপুর নাকম এলাকা)।
গ্রেপ্তারকৃতদের সাতক্ষীরা সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৫ আগস্ট সাতক্ষীরা কারাগার ভেঙে আসামি পালানোর ঘটনায় সাতক্ষীরা কারাগারের জেলার হাসনা জাহান বিথী বাদী হয়ে সন্ত্রাস বিরোধী আইনের অধীনে ৮৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৩০০০-৩৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কাটিয়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক উজ্জ্বল সরকার গত ২৬ আগস্ট পর্যন্ত আরও কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছেন এবং একজন আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
নাশকতার প্রেক্ষিতে র্যাব-৬ এর গোয়েন্দা দল অভিযানে তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে, এবং জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে।