বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে বিশেষ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়েছে সরকার। সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের এ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত রাজধানীসহ সারাদেশে কার্যকর হয়েছে আজ মঙ্গলবার থেকে।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। এতে বলা হয়, আগামী দুই মাস (৬০ দিন) এ সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে।
এ বিষয়ে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সামি-উদ-দৌলা চৌধুরী বলেন, সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এটি সারাদেশে কার্যকর থাকবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দ্য কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর ১৮৯৮-এর ১২ (১) ধারা অনুযায়ী, নিজ কর্মক্ষেত্রে, অধিক্ষেত্রে আগামী দুই মাসের জন্য তারা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা পাবেন। এই সময়ে তারা ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮-এর ধারা ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫ (২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবেন।
ফৌজদারি কার্যবিধির ১৮৯৮-এর ১৭ (১) ধারা অনুযায়ী, ক্ষমতাপ্রাপ্ত এই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে দায়িত্ব পালন করবেন।
জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব ফিরোজ মিয়া বলেন, ‘দেশের স্বার্থে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকার প্রয়োজন মনে করলে সেনাবাহিনীকে কাজে লাগাতে পারে। পোশাক কারখানা এলাকাগুলোতে যা আরম্ভ হয়েছে, সেখানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেই। পুলিশ একেবারে অকার্যকর। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
সাবেক সচিব এ কে এম আব্দুল আউয়াল মজুমদার বলেন, ‘অতীতেও জাতীয় সংকটে বিভিন্ন সময়ে সেনাবাহিনীকে এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। দেশের প্রয়োজনে এখন এটা হতেই পারে। এর মধ্যে মন্দ কিছু দেখছি না।’
তিনি বলেন, ‘নতুন সরকার আসার পর আমরা সকলে অতি আবেগী হয়ে গেছি। দাবি-দাওয়ার পাহাড় নিয়ে সবাই নেমে পড়েছি। নতুন সরকারের পক্ষে সব দাবি হঠাৎ করে পূরণ করা তো সম্ভব নয়। শিল্প শ্রমিক ভাইদের এবং বিভিন্ন খাতের পেশাজীবীদের এই বাস্তব সত্যটুকু বুঝতে হবে।’
দীর্ঘ দিন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এই সাবেক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, সেনাবাহিনীকে এই বিচারিক ক্ষমতা প্রয়োগ সতর্কভাবে করতে হবে। তাদের অনুরোধ করব, তারা যেন ফৌজদারি কার্যবিধির সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো যথেষ্ট সতর্কভাবে প্রয়োগ করেন। যেটুকু দরকার, শুধু সেটুকু যেন প্রয়োগ করা হয়। কোনকিছুতে বাড়াবাড়ি যেন না হয়।